বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশে তাপমাত্রা বিগত ৭ দশকের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ। এখন না হয় গাছপালা কম কিন্তু অতীতে তো গাছপালা ছাওয়া ছিল বাংলাদেশ কিন্তু কেন তখনও তাপমাত্রা অসহনীয় হতো?
এর অনেক কারণ আছে- সূর্য সব সময় সমান তাপ ছড়ায় না। এর পারমাণবিক বিস্ফোরণ কমবেশি হয়ে থাকে। পৃথিবীর অবস্থান সবসময় সূর্য থেকে একই দূরত্বে থাকে না। কাছে থাকলে তাপ বেশি দূরে থাকলে তা কম হওয়া স্বাভাবিক। পৃথিবীর হেলন সবসময় এক না, সূর্যের দিকে যে অংশ মুখ করে থাকে সেখানে তাপমাত্রা বেশি হয়। সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর ঘোরার পথ বৃত্তাকার না। পৃথিবীর চারপাশে বায়ুমণ্ডলের কম্পোজিশন একরকম থাকে না। পরিবেশের নানা দূষণের জন্য, নতুন নতুন রাসায়নিক তৈরির কারণে এবং তা বাতাসে মিলিয়ে যাওয়ায় বাতাসের গুণগত মানে পরিবর্তন আসে। তাপ ধারণ ক্ষমতা কম বেশি হয়। সে কারণেও তাপমাত্রা তারতম্য ঘটে। আমরা জানি সূর্য তার পরিবার পৃথিবীরসহ সবাইকে নিয়ে ছায়াপথ দিয়ে দৌড়াতে থাকে, এক জায়গায় থাকে না। হয়তো সেটিও একটি কারণ। তাই পৃথিবীতে কখনো কখনো বরফ যুগ আসে। আর দুই বরফ যুগের মাঝে উষ্ণ যুগ, আমরা এখন উষ্ণযুগে বাস করছি। আজ থেকে প্রায় ছয় হাজার বছর আগ থেকে পৃথিবী উষ্ণযুগে প্রবেশ করেছে। আজ থেকে দু’কোটি বছর আগে যদি আমি সাহারা মরুভূমিতে যেতে পারতাম তবে মালেশিয়া ইন্দোনেশিয়ার মত ট্রপিকাল রেইন ফরেস্ট দেখতাম। কিন্তু আজকে সেখানে কি দেখি ? বালি আর বালি-মরুভূমি।
এই উষ্ণতা যখন বাস্তব তখন তা মেনে নিয়েই সর্বক্ষেত্রে তাকে মোকাবেলা করতে হবে । এর কোন ব্যতিক্রম নয়।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা স্কুলের থাকা উচিত:
শিক্ষার্থীরা যেহেতু স্কুলের তত্ত্বাবধানে এবং বাড়িতে অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে তাই স্কুলে থাকাকালীন স্কুলকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্কুলের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত। তবে আমাদের দেশে কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত দেওয়ার একটি সংস্কৃতি আছে। তাই শিক্ষককে যদি এই ক্ষমতা দেওয়া হয় তবে সেই ক্ষমতা যাতে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারে তার জন্য তাদেরকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এই সক্ষমতা সহসা হয় না অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়।
অধিদপ্তর পরামর্শ দিতে পারে :
শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত যেসব অধিদপ্তর আছে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সময়ের সময়ে পরামর্শ দিতে পারে। যদি তারা সচেতন থাকে আজ-কালকার দিনে যেহেতু অনেক পূর্বাভাস পাওয়া যায় তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষকদেরকে বা শিক্ষক প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে নতুন নতুন কর্মসূচি নিতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। নতুনভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করতে পারে।
–
মন্ত্রণালয় সামগ্রিক নীতিমালা দিতে পারে:
মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে নীতিমালা কৌশল এবং অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে পারে। যা অনুসরণ করে অধিদপ্তর বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে চালানোসহ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আয়েশ দিতে পারে।
গ্রীষ্মের ছুটি এখনই দেওয়া:
যখন উত্তাপ এড়ানো বা সহ্য করা সম্ভব না তখন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আশা বন্ধ করা যেতে পারে। আমাদের দেশে গ্রীষ্মের ছুটি দেয়ার রেওয়াজ আছে। সেই গ্রীষ্মের ছুটি নির্দিষ্ট সময়ে না রেখে অবস্থা বুঝে এগিয়ে পিছিয়ে কিংবা কমবেশি করা যেতে পারে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ক্লাস শুরু করে দুপুরের তাপদাহ এড়িয়ে যাওয়া যায়।
ক) স্কুল ভবন: উত্তরাঞ্চলে শীত বেশি পড়লেও গরম দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অসহনীয়। ২০২৪ সালে কোথাও কোথাও প্রায় ৪৩ ডিগ্রি। গত ৭ দশকে এত গরম কখনও পড়েনি। বাংলাদেশ নদী নালার দেশ তাই এখানে বাতাসের আদ্রতা ও তুলনামূলকভাবে অন্য দেশের চেয়ে বেশি হওয়ায় গরমের অনুভূতিও বেশি। উচ্চ তাপমাত্রা বিবেচনায় রেখে স্কুল ঘর ডিজাইন করা প্রয়োজন। অধিকাংশ স্কুলে এখন বিদ্যুৎ সংযোগ আছে। যেসব স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া প্রয়োজন। সেই সাথে বৈদ্যুতিক পাখা। পর্যায়ক্রমে শিতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র সংযোজন করা যায়।
১. স্কুল ভবনের নকশা
স্কুলের নকশা এমন হওয়া উচিত যেন গরমের সময় বাইরের তাপমাত্রা চেয়েও ঠান্ডা থাকে। আবার শীতের সময়ও উষ্ণ থাকে। যখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র আবিষ্কার হয়নি তখন বাড়ি ঘরের ছাদ উঁচু করে তৈরি করা হতো। তবে বেশিরভাগ বাড়ি ঘরের নির্মাণ সামগ্রী কাঠ খড় ও মাটি হওয়ায় উচ্চ তাপমাত্রা এড়িয়ে যাওয়া যেত। বর্তমানে কংক্রিট ও ইট-সিমেন্টের ভবন হওয়ায় দ্রুত উত্তপ্ত হয়। তাই আমাদেরকে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে গবেষণা করা দরকার। গরমের সময় অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা এবং ঠাণ্ডার সময় অপেক্ষাকৃত গরম থাকে এমন ঘর তৈরি করার দিকে নজর দেওয়া দরকার।
২. ক্রস ভেন্টিলেশন
স্কুল ঘর যাতে বাতাসে ঠান্ডা অনুভূতি থাকে সেজন্য সামনে পেছনের জানালা প্রয়োজনীয় প্রশস্ততা সোজাসুজি থাকা প্রয়োজন যেন সহজে বাতাস আসা যাওয়া করতে পারে।
৩. নির্মাণ সামগ্রী
নির্মাণ সামগ্রী এমন হওয়া দরকার যেন তাপে দ্রুত উত্তপ্ত না হয়।
৪. দরজা জানালা
এমন হওয়া দরকার যেন বন্ধ করা থাকলে তাপ ভিতরে প্রবেশ না করতে পারে। বাইরে শব্দ যেন ভিতরে না প্রবেশ করে শহরাঞ্চলের স্কুল ঘরেও সেই ধরনের দরজা জানালা হওয়া প্রয়োজন। আজকালে মাঝখানে ফাঁকা দুপাশে কাচের প্যানেল পাওয়া যায় যার মধ্য দিয়ে শব্দ ও তাপ সহজে প্রবেশ করতে পারে না। তবে এই ধরনের দরজা জানালার খরচ নিঃসন্দেহে বেশি পড়বে। দেশের অর্থনীতি দিনে দিনে শক্তিশালী হচ্ছে তাই আমাদেরকেও ভিন্নভাবে ভাবতে হবে।
খ) স্কুল চত্বর:
আমাদের স্কুলের মাঠে নির্মাণসামগীর উচ্ছিষ্ট থাকার কারণে ঘাস বা গাছপালা জন্মানো কঠিন হয়। অবশ্য অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর আনাগোনা কোন কোন ক্ষেত্রে ঘাস জন্মাতে পারে না। তাই আমরা যদি স্কুল মাঠে ঘাস রোপন এবং তার পরিচর্যা করি তবে তাপমাত্রা কম রাখা সম্ভব।
আমরা লক্ষ্য করেছি ঢাকার যে এলাকায় গাছপালা বেশি সে এলাকায় তাপমাত্রা প্রকৃত কম থেকেছে। গাছ সালোকসংশ্লেষণের জন্য সূর্যালোক গ্রহণ করে তাই প্রতিবেশের তাপমাত্রা কম থাকে। স্কুলের গ্রীন বাউন্ডারি এবং বাউন্ডারির চারিপাশে গাছ লাগিয়ে ছায়া সৃষ্টি করে তাপমাত্রা সহনীয় করা যায়।
১.সবুজায়ন ও সবুজ বেষ্টনী
স্কুলের চারি পাশে রাস্তার ধার দিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা যায়। গ্রামাঞ্চল বা মফস্বল শহরে এটি করা সম্ভব হলেও হয়তো বড় বড় শহরের সেটা সম্ভব না।
২. সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার
স্কুলের ছাদে এবং দেয়ালে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল লাগিয়ে বিদ্যুৎ পাওয়া যায় একই সাথে স্কুল ঘরের তাপমাত্রা নিম্ন রাখা সম্ভব। তবে এজন্য আলাদা বাজেটের প্রয়োজন। সরকার থেকে সৌর বিদ্যুতের এই ধরনের প্রকল্প নেওয়া যায়।
৩. তাপ তরঙ্গের ব্যবহার
সাধারণ সৌর প্যানেলগুলি সূর্যালোক থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে কিন্তু তাপ থেকেও বিশেষায়িত প্যানেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে তবে বাজারে এগুলো পাওয়া যায় না। এ বিষয়ে গবেষণা করা দরকার এবং সূর্যালোক ও তাপ উভয়ের থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করা যায় এমন হাইব্রিড প্যানেল দিয়ে সৌর বিদ্যুৎ তৈরি করলে পরিবেশের তাপমাত্রা কম থাকবে। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে গবেষণা করতে পারে এবং শিল্পপতিদের সাথে একত্র হয়ে ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন করা যায়।
গ) শেখা শেখানো:
ক্লাসে শেখার শেখানোর সংস্কৃতিতে কিছুটা পরিবর্তন এনেও উচ্চতাপ এড়িয়ে চলা সম্ভব। এর ফলে অসুস্থতা জীবনহানি ইত্যাদিও মোকাবেলা করা সম্ভব।
১. অনলাইনে লেখাপড়া
যখন তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হয় তখন স্কুলে আসা বন্ধ করে অনলাইনে লেখাপড়া চালানো সম্ভব। আজ থেকে প্রায় এক দশক আগে আমি এটুআই আই-এর জাতীয় প্রকল্প পরিচালক থাকার সময় আমার নেতৃত্বে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম ও টিচার লেট কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট উদ্ভাবন করেছিলাম। এছাড়াও প্রাথমিক মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার ছয়টি করে বই-এর ই-বুক তৈরি করা হয়েছিল। এগুলোর প্রতি নজর দিলে লেখাপড়াও কোন ঘাটতি থাকবে না অপরদিকে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা গরমের ক্ষতিকর দিক এড়িয়ে চলতে পারবে।
২. অনলাইন কনটেন্ট তৈরি :
শুধু পাঠ্যপুস্তক জ্ঞানের জন্য পর্যাপ্ত না আরো অনেক ধরনের শিক্ষা কনটেন্ট তৈরি করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে বিশেষ প্রকল্প নেওয়া উচিত। যদিও আজকাল অনেক ধরনের কন্টেন্ট অনলাইনে পাওয়া যায় কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনায়াসে পাওয়ার জন্য আলাদাভাবে বিন্যস্ত করে রাখা প্রয়োজন।
৩. শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাড়িতে নেট কানেকশন
অনলাইনে লেখাপড়ার জন্য শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাসায় হাই স্পিড নেট কানেকশন দরকার। আমাদের আইসিটি পলিসিতে এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা আছে। শুধু অনুসরণ করা দরকার। অনুসরণের ক্ষেত্রে দিক নির্দেশনার চেয়ে আমরা পিছিয়ে আছি।
৪. গরম কেন হয় সে বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ:
গরম কেন হয় সে বিষয়ে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অবহিত করা দরকার যেন তারা কুসংস্কার বা অপপ্রচারের শিকার না হয়। একই সাথে তারা পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য যেন উদ্ভূত হয় সেরকম তথ্য তাদের হাতের নাগালে রাখা উচিত। এ বিষয়ে সম্পর্কে সম্মুখ জ্ঞান থাকলে কিভাবে গরম এড়িয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়ে আরো বেশি সচেতন ও সতর্ক হওয়া সম্ভব।
ঘ) শিক্ষক ছাত্র প্রশিক্ষণ:
অন্য অনেক বিষয়ে হয়তোবা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কিন্তু নতুন প্রেক্ষাপটে প্রশিক্ষণকে নতুন করে সাজাতে হবে। গরমের সময় শরীর ঠিক রাখা, লেখাপড়া চালু রাখা, পরিবেশকে গরম হতে না দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দরকার।
১. সারভাইভাল কোর্স
গরমের মধ্যে কিভাবে শরীর ঠিক থাকতে রাখতে হয়। কিভাবে টিকে থাকতে হয় সে বিষয়ে কোর্স করা দরকার। অন্যান্য দেশে এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যাকে সারভাইবাল কোর্স বলে। আমি নিজেও ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি তে এরকম একটি প্রশিক্ষণ নিয়েছি।
২. গরমের সময়ের কাপড় ব্যবহার
গরমের পোশাক-আশাক গরমের উপযোগী হওয়া প্রয়োজন কিন্তু অনেক সময় ফ্যাশনের কারণে গরমের সময় গরমের জন্য উপযুক্ত নয় এমন পোশাক ব্যবহার করে থাকি। উন্নত দেশে পোশাকের দোকানে গরমের সময় শুধু গরমের পোশাক আর শীতের সময় শীতের পোশাক কিনতে পাওয়া যায়। আমাদের দেশে সেরকমটা না তবে বুদ্ধি করে গরমের সময় গরমের পোশাক এবং শীতের সময় শীতের পোশাক ব্যবহার করতে হবে।
৩. গরমের সময়ের খাদ্য গ্রহণ
গরমের দিনে কোন ধরনের খাদ্য গ্রহণ করতে হবে সে বিষয়েও আমাদের জানা প্রয়োজন। আমরা লক্ষ্য করেছি গরমের সময় টক জাতীয় ফল হয়। প্রকৃতির প্রাকৃতিক নির্বাচনে এগুলো হয়েছে তাই প্রকৃতির সাথেই তাল মিলানো উচিত। তবে পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়ার জন্য শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন। সেই সাথে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি। আমাদের শৈশবকালে আমরা লক্ষ্য করেছি গরমের দিনে লেবুর শরবত দেয়া হতো। প্রতিটি বাড়িতে লেবু গাছ থাকতো এবং প্রচুর লেবু ধরতো। আজকালকার দিনে বাড়িতে বাড়িতে লেবু গাছ দেখা যায় না। অবশ্য শহর এলাকায় শেষ সুযোগ নেই।
৪. গরমের লাইফ স্টাইল
গরমের লাইফ স্টাইল কেমন হবে ? সে বিষয়ে আমাদের জানা দরকার। কিছু মানুষের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র গাড়ি বাড়িতে থাকলেও বেশিরভাগ লোকের নেই। আর যাদের নেই তাদেরকেই এই গরমে বাইরে কাজ করতে হয়। তাই তাদেরকে গরমের লাইফ স্টাইল সম্পর্কে বেশি জানা দরকার। আমাদের দেশে যে অংশের মানুষ লিখতে পড়তে পারেনা তাদের জন্য এই তথ্য পাওয়ার সহজ না। তবে আজকালকের মোবাইল ফোনের সুবাদে। টেলিভিশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে এসব বিষয় জানা সম্ভব। আমাদের ডাক্তারসহ বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।
ঘ)গরমের সময়ের পরিবহন:
গরমের দিনে পরিবহন কোন কোন সময় অসহনীয় হয়ে ওঠে। শহরের বাসগুলো চারিপাশে ধাতব পদার্থের মোড়া থাকায় সহজে গরম হয়। যারা বাস্কেট বডি তৈরি করেন তাদের এ বিষয়ে সচেতন করা যায়। যারা বাস চালান তাদেরকেও ভরা রৌদ্রে বাস বেশিক্ষণ না থামিয়ে রাখার জন্য বলা যায়।
বিভিন্নভাবে উত্তপ্ত আবহাওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়। একই সাথে অন্যকে রক্ষা করার জন্য পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া যায়। শিশুরা যেহেতু বড়দের উপর বা অভিভাবকদের উপর নির্ভরশীল তাই তাদের দায়িত্ব অভিভাবকদেরই নিতে হবে। এই অভিভাবক বলতে পিতা-মাতা শিক্ষক এবং শিক্ষার সাথে জড়িত সকল সংস্থা কর্মীরাও অন্তর্ভুক্ত। আসুন আমরা সবাই মিলে এই কাজটি করি। কিভাবে করা যায় তা ভাবি। পরিবেশ পরিস্থিতিকে পরিবর্তন করার জন্য পরামর্শ দিই। মনে রাখতে হবে আমাদের শিশুদের যেন ফার্মের মুরগি না বানাই।
প্রকাশ ৩০শে এপ্রিল ২০২৪
এন আই খান
সাবেক শিক্ষা সচিব
সাবেক মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা