সময়ের কাছে কোন কিছুই আদিভাবে টিকে থাকে না। একসময় মাস্তান বলতে ধর্ম পরায়ণ লোক বোঝাতো এখন মাস্তান বলতে বাংলায় দুর্বৃত্ত বোঝায়। এক সময় ফ্যাক্টর বলতে করণিক বোঝাতো। আর যেখানে ফ্যাক্টররা বসে কাজ করতো তাকে ফ্যাক্টরি বলতো যেমন কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম। আজকে করোনিক বা কেরানি বললে গালিগালাজ বোঝায়, অফিস সহকারি বলতে হয়।
ঠিক সেই রকম এক সময় শিম্পোজিয়াম বলতে পুরুষের মদের আসর বোঝাতো। কোন একটা ঘটনার পর বা কৃতকার্যতার পর মদের আসর দিয়ে উদযাপন করা হতো। সেখানে শুধু পুরুষেরই অধিকার ছিল। মেয়েরা ওই আনন্দের অংশীদার হতে পারত না। তবে মেয়েরা গায়িকা কিংবা নর্তকী হিসেবে পুরুষদের মনোরঞ্জনের জন্য অংশগ্রহণ করতে পারত। সিম্পোজিয়ামের পর মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরতো। মাতাল হয়ে মারামারি গালাগালি যে হতো না তা কিন্তু না। এটির উৎপত্তি গ্রিসের এথেন্সে। সেই আমলের সিম্পোজিয়ামকে মাটির পাত্রের শিল্প চিত্রে প্রাচীনকালে গ্রীসের শিল্পীরা ধরে রেখেছে। পশ্চিমা প্রত্নতত্ত্ববিদরা এগুলো উদ্ধার করেছে। ভাঙচুর করা মৃৎপাত্রগুলোকে জোড়া লাগিয়েছে। কোন শাসকের আমলে সৃষ্টি সেটা ভেবে তারা ধ্বংস করেনি, পুড়িয়ে ফেলেনি। তারা জ্ঞানের কদর করেছে। আমরা কি করলাম ?
এখন সিম্পোজিয়ামে নারী-পুরুষ সবাই অংশগ্রহণ করতে পারে। এখন আর আনন্দ উৎসবের জন্য এর আয়োজন করা হয় না। মূলত কোন জ্ঞানের বিষয়ে মত বিনিময়ের জন্য উপস্থাপনা করা এর উদ্দেশ্য। এক বা একাধিক বক্তা থাকতে পারে; কোন বিশেষ বক্তার প্রেজেন্টেশন থাকতে পারে; প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকতে পারে কিন্তু মাতলামি হয় না। কোথাও খাবারের সাথে মদ থাকতে পারে কিন্তু মাতাল হওয়াকে স্বাগত জানানো হয় না। আগের মত অন্য খাবারদাবারের ব্যবস্থা থাকতে পারে। তবে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আনন্দ চিত্তে চিন্তা করতে করতে বাড়ি ফিরে যায়। সারা পৃথিবীতে এখন সিম্পোজিয়াম হয়। জন্ম এর আজন্ম পাপ বলে কেউ ধরে নেয় না ? ইতিহাস জানলে কি করত তা ঠিক জানিনা !







