“চাকরি নেব না, দেব”-এন আই খান।
স্লোগান তিনি বাংলাদেশে উদ্ভাবন করেন। এটুআই এর জাতীয় প্রকল্প পরিচালক থাকাকালীন ২০০৯ সালে লক্ষ্য করেন আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চাকরি পাওয়ার লক্ষ্যে লেখাপড়া করেন। মন মানসিকতা ও সেভাবে গড়ে উঠে। নিজেরা উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী হন না। উদ্যোক্তা হওয়া সম্মানজনক বলে মনে করেন না। উদ্যোক্তা সঠিক অর্থ উপলব্ধি করতে পারেন না। কিংবা উদ্যোক্তা হওয়ার সম্মানজনক মর্মে শিক্ষার্থীরা মত পোষণ করেন না।
বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেটধারী বেকার। সরকারি-বেসরকারি যেখানেই হোক সবাইকে চাকরি দেওয়ার মতো ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। কিন্তু সবাই স্বউপার্জন করতে পারে। সেজন্য শিক্ষার্থী থাকাকালীন তাদের কর্ম জীবনের লক্ষ্য ঠিক করার জন্য শিক্ষকরা উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। এবং তা এন্টারপ্রিনিউরশিপ হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে কোন এন্টারপ্রিনিউরশিপ ইনস্টিটিউট নেই।
শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সময় এরূপ কোনো ধারণা দেয়া হয় না। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কতজন বিসিএস, সেনা কর্মকর্তা, ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তার হলো তার ওপরে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মান বা গুণগত মান নির্ভর করে।
এই অবস্থার পরিবর্তনের চেষ্টা করলেন। দেশের জেলায় জেলায় ভ্রমণ করলেন করলেন, বক্তৃতা দিলেন, টেলিভিশনের টক শোতে অংশগ্রহণ করলেন। বললেন, আমাদের শিক্ষার লক্ষ্য পরিবর্তিত হওয়া উচিত। শিক্ষা লক্ষ্য হওয়া উচিত “আমরা চাকরি নিব না, চাকরি দেব”। এটুআই এর জাতীয় প্রকল্প থাকাকালীন সময়ে সবাইকে রাজি করাতে না পারলেও ২০১২ সালে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে পদায়ন হওয়ায় একটি সুবর্ণ সুযোগ এসে গেল। এ লক্ষ্যে তাদের মন-মানসিকতা পরিবর্তন এবং বাস্তবে দেখানোর জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করলেন তার নাম “লানিং এন্ড আনিং”। এই স্লোগানের পালে হাওয়া লাগতে কিছুটা সময় লেগেছে। কিন্তু পালে হাওয়া লেগেছে; আমাদের রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ “চাকরি নেব না চাকরি দেব” স্লোগান দেয়া শুরু করেছে। এটি আশার বিষয়। সবাইকে একটা সুন্দর জীবন দেয়ার প্রয়াস। কাউকে না কাউকে উদ্ভাবন করতে হয়। এখানে এন আই খান এগিয়ে এসেছিলেন।



